ডেস্ক রিপোর্ট : চট্টগ্রামের পটিয়ায় সাবেক এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ যুবলীগ নেতা ১০-১৫ টি মামলার আসামি সন্ত্রাসী নুরুল আবছার (৩৯) কে থানা থেকে ছাড়াতে শোভনদন্ডী ইউনিয়নস্থ এক বিএনপি নেতা গভীর রাত পর্যন্ত তদবির করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঐ নেতা সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেশ কয়েক দফা সামশুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের সাথে থানার ভেতরে বাইরে যোগাযোগ করতে দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পটিয়া থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যুবলীগ নেতা নুরুল আবছারকে গ্রেফতার করে। সে উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা গ্রামের আবদুল ছবুরের ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবলীগের কাউন্সিলর ও সাবেক প্রচার সম্পাদক ।

গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সে সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছত্রছায়ায় থেকে নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিএনপি নেতা জানান, যুবলীগ নেতা নুরুল আবছারকে থানা থেকে ছাড়াতে শোভনদন্ডী ইউনিয়নস্থ পটিয়া উপজেলা বিএনপির এক নেতা পটিয়া থানায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ঐ বিএনপি নেতা সফল হতে পারেনি। ঐ নেতা সাবেক হুইপ ও এমপি সামশুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন খ্যাত আওয়ামী লীগ নেত্রী নাছিমা আকতারকেও আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিএনপি নেতা জানান। এমনকি ঐনেতা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাছিমা আকতারকে শোভনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার জন্যও সরকারি বিভিন্ন দফতরে চেষ্টা করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতা সাইর আহমদ জানান, সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর সাথে গত ১৫ বছর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করা শোভনদন্ডী ইউনিয়নের নুরুল ইসলাম, আবদুল মোনাফ, আহমদ হোসেন, হাফেজ আহমদ,শোভনদন্ডী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নাছিমা আকতার , ইউনিয়ন যুবলীগের কাউন্সিলর গিয়াসউদ্দিন রাজিব প্রকাশ কমপ্লিট, আবু তৈয়ব,মনজুর আলম সহ ১০ -১৫ জন আওয়ামী লীগ -যুবলীগ নেতা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারাও গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আবছারকে ছাড়িয়ে নিতে বিএনপি নেতাদের কাছে ধর্না দিয়েছেন।

গত কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর খালেদ, শোভনদন্ডী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসান খোকন, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুল কবিরের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকটি ছবি ভাইরেল হয়েছে।
গিয়াসউদ্দিন রাজিব কমপ্লিট প্রতি বছর সামশুল হক চৌধুরীর কোরবানির গরুর মাংস ও ত্রান সামগ্রী বিতরণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। এখন সে নিজেকে বিএনপি সাজানোর চেষ্টা করতেছে।

গ্রেফতারকৃত আবছার সামশুল হক চৌধুরীর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে শোভনদন্ডী ইউনিয়নের হিলচিয়া ও হাতিয়ারঘোনা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, চুরি, গুলি, অগ্নিসংযোগ,দান বাক্সের টাকা চুরি সহ একাধিক ঘটনার মূল হোতা।

স্থানীয় বিএনপি নেতা ও মামলার বাদী বাহাদুর ইসলাম খান জানান,সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহচর আওয়ামী লীগ নেতা সন্ত্রাসী আবছার গ্রেফতার হয়েছে শুনে এলাকার মানুষ আনন্দিত হয়েছে। সে গত ১৫ বছর হিলচিয়া হাতিয়ারঘোনা গ্রামের মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। বহু মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। এমনকি আমিসহ এলাকাবাসীকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুরের নামে রাস্ট্রদ্রোহী মামলা সহ একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তার দলের আরও ৮-১০ জনকে গ্রেফতার করার পর এলাকায় শান্তি আসবে। না হয় যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বৃহস্পতিবার দিনেদুপুরে আবছারের নেতৃত্বে হাফেজ আহমদ সহ একদল সন্ত্রাসী কাজীর মসজিদের পাশে আমাদের ও নাসির গংদের গাছপালা কেটে লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পটিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। দু:খজনক বিষয় হলো দুয়েকজন বিএনপি নেতা তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন। অচিরেই তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।